নগর জীবনের ক্লান্তি ভুলে স্বস্তির নিশ্বাস নিতে চান প্রকৃতির মাঝে? ঢাকা থেকে খুব বেশি দূরে নয়, গাজীপুর জেলার চেলাই নদী সংলগ্ন বাড়িয়া, ব্রাহ্মণগাঁও, বক্তারপুর ও বামচিনি মৌজা ঘেরা মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক জলাভূমি বেলাই বিল হতে পারে আপনার স্বল্প সময়ের আদর্শ গন্তব্য।

বেলাই বিলের ইতিহাস ও বৈশিষ্ট্য

প্রায় ৮ বর্গমাইল জুড়ে বিস্তৃত এই বিলটির সৃষ্টির পেছনে আছে প্রাকৃতিক পরিবর্তনের গল্প। জানা যায়, ৪০০ বছর পূর্বে এই বিলে কোনো অস্তিত্ব ছিল না। সময়ের ব্যবধানে চেলাই নদীর জলপ্রবাহ এবং প্রাকৃতিক পরিবর্তনের ফলে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে আজকের বেলাই বিল।

বছরের বেশিরভাগ সময় জলে পরিপূর্ণ থাকলেও বর্ষা মৌসুমেই এর সৌন্দর্য সবচেয়ে বেশি ফুটে ওঠে। শাপলা-শালুকে ভরা বিল, নৌকার চলাচল, দূরের গ্রামগুলো যেন দ্বীপের মতো ভাসছে বিশাল জলরাশির মাঝে – পুরো দৃশ্যটিই মন ছুঁয়ে যায়।

দ্বীপগ্রাম ও বিশেষ আকর্ষণ

বিলের মাঝে বামচিনি মৌজার দ্বীপগ্রামটি এক বিশেষ আকর্ষণ। এই মৌজার একমাত্র বাড়িটি ‘এক মৌজায় এক বাড়ি’ হিসেবে দেশজুড়ে পরিচিত। সেই সঙ্গে নদীর পাশে থাকা ঐতিহাসিক ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী দর্শন করেও আপনার ভ্রমণকে আরও অর্থবহ করতে পারেন।

কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে বাস বা নিজস্ব যানবাহনে গাজীপুর বাসস্ট্যান্ড অথবা শিববাড়ি নেমে সেখান থেকে রিকশা বা সিএনজি করে কানাইয়া বাজার যেতে হবে। এখান থেকেই শুরু হবে আপনার বেলাই বিলের জলভ্রমণ। ঘাটে নৌকা ভাড়া নিয়ে দরদাম করে ঘুরে দেখতে পারেন পুরো বিল।

ব্যক্তিগত গাড়িতে গেলে, টঙ্গী ফ্লাইওভার পার হয়ে পুবাইল কলেজ গেট থেকে বামে ঢুকে জল ও জঙ্গলের কাব্য রিসোর্ট পেরিয়ে ডান দিকে মোড় নিয়ে মিনিট দশেক এগুলেই পৌঁছে যাবেন কানাইয়া বাজার।

কোথায় খাবেন ও থাকবেন?

কানাইয়া বাজারে হালকা নাস্তা ছাড়া খাবারের তেমন ব্যবস্থা নেই। তাই নিজের খাওয়ার ব্যবস্থা সঙ্গে নিয়ে যাওয়াই উত্তম। চাইলে রাত্রিযাপনের জন্য নৌকায় রাত কাটাতে পারেন, তবে আগে থেকে কানাইয়া বাজার কমিটিকে জানিয়ে রাখা ভালো।

আর চাইলে গাজীপুরের কাছাকাছি থাকা বিভিন্ন রিসোর্ট – যেমন নক্ষত্রবাড়ি, ছুটি রিসোর্ট, দ্যা বেস ক্যাম্প – থেকেও দিন শেষে বিশ্রাম নিতে পারেন।

Scroll to Top