গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নে অবস্থিত সেইন্ট নিকোলাস চার্চ (St. Nicolas Church) শুধু খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের জন্যই নয়, বরং ইতিহাস ও স্থাপত্য ভালোবাসা যেকোন দর্শনার্থীর জন্য একটি অনন্য গন্তব্য। ১৯৬৩ সালে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে নির্মিত এই গির্জা বর্তমানে বাংলাদেশের বৃহত্তম খ্রিষ্টান মিশনারি চার্চ হিসেবে বিবেচিত।
ঐতিহাসিক পটভূমি ও স্থাপত্যশৈলী
ষোড়শ শতাব্দীর শেষদিকে পর্তুগীজ খ্রিষ্টানদের আগমন এবং তাঁদের চলে যাওয়ার পরে সম্রাট জাহাঙ্গীরের আদেশে এই গির্জার গোড়াপত্তন হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে ইউরোপীয় স্থাপত্যধারায় বাঙালি কারিগরদের মাধ্যমে আধুনিক গির্জা ভবন নির্মাণ করা হয়।
স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য:
-
ছয়টি অষ্টকোণাকৃতির সেমি-গোথিক ছাদ
-
১২টি লোহার খুঁটির উপর নির্মিত একতলা ভবন
-
৪টি প্রবেশপথ, প্রধান দরজার সামনে যিশুর মূর্তি
-
বারান্দাযুক্ত প্রবেশপথ, সমবেত প্রার্থনা হল ও একক উপাসনা কক্ষ
-
৩টি সেমি-সার্কুলার দরজা ও বৃহৎ হলঘর
এই গির্জা থেকেই কালীগঞ্জ আঞ্চলিক বাংলায় প্রথম দ্বিভাষিক বাইবেল, অভিধান ও গদ্য বই অনূদিত ও প্রকাশিত হয়।
চার্চ সংলগ্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
গির্জাকে ঘিরেই ১৯১০ সালে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়, যা বর্তমানে নিম্ন মাধ্যমিক ইংরেজি বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়েছে।
কিভাবে যাবেন?
📍 রুট:
-
প্রথমে গাজীপুরের টঙ্গী আসতে হবে।
-
সেখান থেকে বাস বা সিএনজিতে আহসানুল্লাহ মাস্টার ফ্লাইওভার পার হয়ে নলছটা সেতু হয়ে সেইন্ট নিকোলাস চার্চে পৌঁছানো যাবে।
-
নলছটা সেতু থেকে চার্চের দূরত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার।
কোথায় থাকবেন?
ঢাকা থেকে একদিনে যাওয়া-আসা সম্ভব হলেও রাত্রিযাপনের জন্য গাজীপুর শহরে বেশ কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে:
-
হোটেল জলি, অনামিকা, ড্রিম ল্যান্ড, এলিজা ইন্টারন্যাশনাল
-
রিসোর্টের মধ্যে: সারাহ, নক্ষত্রবাড়ি, সোহাগ পল্লী, ছুটি রিসোর্ট, স্প্রিং ভ্যালী
📌 নোট: রিসোর্টে থাকতে হলে আগাম বুকিং করা জরুরি।
কোথায় খাবেন?
-
গাজীপুর শহরে: কথাকলি, ক্যাফে কস্তুরি, স্কাই ওয়ার্ড, বাংলা ঘর, রূপসা রেস্টুরেন্ট
-
চার্চ সংলগ্ন নাগরী বাজারে হালকা নাস্তা ও চায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।
আশেপাশের দর্শনীয় স্থানসমূহ
চার্চ ভ্রমণের পাশাপাশি ঘুরে আসতে পারেন:
-
ভাওয়াল রাজবাড়ি
-
ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক
-
নুহাশ পল্লী
-
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক