গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরে প্রায় ৫ একর জায়গা জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক ভাওয়াল রাজবাড়ী (Bhawal Rajbari)। কালের সাক্ষী এই রাজবাড়িটি শুধু জমিদারি ঐতিহ্যের স্মারক নয়, বরং ভাওয়ালের সন্ন্যাসী মামলার জন্যও বিখ্যাত। বর্তমানে এটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হলেও, রাজকীয় স্থাপত্য আর ইতিহাসপিপাসু পর্যটকদের কাছে এটি অন্যতম আকর্ষণ।
ভাওয়ালের সন্ন্যাসী রাজা ও ঐতিহাসিক পটভূমি
ভাওয়াল রাজপরিবারের রাজকুমার রমেন্দ্র নারায়ণ রায় কথিত মৃত্যুর ১২ বছর পর সন্ন্যাসীর বেশে ফিরে এলে শুরু হয় বিখ্যাত “ভাওয়ালের সন্ন্যাসী মামলা”। এই ঐতিহাসিক ঘটনা অবলম্বনে উত্তম কুমার অভিনীত “সন্ন্যাসী রাজা” চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।
স্থাপত্য ও আকর্ষণীয় অংশসমূহ
-
নির্মাণ শুরু: জমিদার লোকনারায়ণ রায়, সম্পন্ন করেন রাজা কালিনারায়ণ রায়
-
রাজবাড়িতে রয়েছে প্রায় ৩৬৫টি কক্ষ
-
বিভিন্ন ভবনের নাম: বড় দালান, রাজ বিলাস, নাট মন্দির, হাওয়া মহল, পুরান বাড়ি, পদ্ম নাভ
-
প্রবেশ পথে নজর কাড়ে নাগলিঙ্গম ফুলের গাছ
-
পশ্চিমে একটি বিশাল দীঘি ও সামনে সমতল খোলা মাঠ
স্থাপত্যে মুঘল ও ইউরোপীয় ধারার ছাপ থাকলেও তাতে রাজকীয় সৌন্দর্য ও নিপুণ কারুকার্যের সংমিশ্রণ অনন্য।
কিভাবে যাবেন?
📍 রুট:
-
প্রথমে যান গাজীপুর চৌরাস্তা (বাস বা ব্যক্তিগত গাড়িতে)
-
সেখান থেকে শিবপুর মোড় হয়ে জয়দেবপুর-রাজবাড়ী সড়ক ধরে পূর্ব দিকে এগোলেই রাজবাড়ী
-
সিএনজিতে “জেলা প্রশাসকের কার্যালয়” বললেও পৌঁছে যাবেন
-
ট্রেনে গেলে জয়দেবপুর স্টেশন থেকে রিকশা বা অটোরিকশা নিয়ে যেতে পারবেন
কোথায় থাকবেন?
ঢাকা থেকে দিনের বেলাতেই ঘুরে ফিরে আসা যায়। তবে রাত যাপন করতে চাইলে নিচের রিসোর্টগুলোর যেকোনোটি বেছে নিতে পারেন:
-
ছুটি রিসোর্ট
-
সারাহ রিসোর্ট
-
নক্ষত্র বাড়ি
-
গ্রিন ভিউ রিসোর্ট
-
সোহাগ পল্লী
-
স্প্রিং ভ্যালী
-
জল ও জঙ্গলের কাব্য
📌 পরামর্শ: রিসোর্টে থাকতে চাইলে আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখা ভালো।
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
ভাওয়াল রাজবাড়ীর আশেপাশে আরও অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে:
-
ভাওয়াল রাজশ্মশানেশ্বরী – রাজপরিবারের শ্মশান (১ কিমি দূরত্বে)
-
ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক
-
নুহাশ পল্লী
-
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক